এই পাতাটি আমার নিজের লেখা নয় বিভিন্ন স্থান হতে সঙ্কলিত...মামুন
সুস্থ থাকার ২০ সূত্র
একেবারে ফিট থাকতে গেলে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। সুস্থ শরীর তার সঙ্গে শান্তিময় জীবন লাভ করতে কে না চায়। কিন্তু বিশৃঙ্খলার আড়ালে জীবনটাই এলোমেলো হয়ে যায়। থাকে না শান্তি, থাকে না স্ব্বস্তি। সুস্থ থাকার কিছু সূত্র আছে। সেগুলো কী তা জেনে নিই।
■ প্রতিদিন খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠে দুই অথবা তিন কি.মি. হাঁটুন। এরপর গোসল করে প্রার্থনা করুন। এতে মন এবং প্রাণ সতেজ থাকবে।
■ সব সময় সোজা হয়ে বসুন।
■ যখনই খাবার খাবেন তখন ভালো করে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করুন। এতে পাচন ক্রিয়া ঠিক থাকবে।
■ মোটা হওয়ার প্রধান কারণ হলো তৈলাক্ত এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া। তাই এ ধরনের খাবার খুব কম খান।
■ সম্ভব হলে সপ্তাহে একদিন উপোস করে শরীরে খাবারের সমতা বজায় রাখুন।
■ গাড়ি থাকলেও খুব বেশি গাড়ি চালাবেন না। বেশিরভাগ সময় হেঁটেই কাজ সারুন। এতে পায়ের মাংসপেশীর ব্যায়াম হবে। আপনি দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে পারবেন।
■ বেশি পরিমাণে সবুজ শাক-সবজি আর ফলমূল খান।
■ ঘরের সব কাজ নিজে করারই চেষ্টা করুন।
■ ব্যস্ত থাকাটা শরীর ও মন—দুয়ের পক্ষে ভালো। তাই কাজে যতটা সম্ভব ব্যস্ত থাকুন।
■ আপনার রুচি ও ব্যক্তিত্ব অনুয়ায়ী পোশাক পরিধান করুন।
■ শরীরের নিয়মিত যত্ন নিন। শরীরের সৌন্দর্য বজায় রাখুন।
■ গরমের দিন রাতে শোয়ার আগে গোসল করুন, এতে ঘুম ভালো হবে।
■ রাতে শোয়ার আগে ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রোম ছিদ্রের মধ্য দিয়ে শ্বসন প্রক্রিয়া চালায়। সে কারণে শোয়ার আগে ঢিলেঢালা পোশাক পরে ঘুমানো উচিত।
■ চুলের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখুন। কারণ চুল হলো সৌন্দর্যের অঙ্গ। সম্ভব হলে সপ্তাহে একদিন হার্বাল শ্যাম্প দিয়ে মাথা ধৌত করুন।
■ প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট ধ্যান করুন। এতে মানসিক শান্তি পাবেন। তার ওপর মনের জোরও বাড়বে।
■ ক্রোধ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলুন।
■ কথার উপরে সংযম রাখুন। আপনার কথায় কেউ যেন মানসিক দুঃখ না পায়। সেটা মাথায় রেখে কথা বলুন।
■ রাতে শোয়ার সময় মনে কোনো চিন্তা রাখবেন না। সুস্ব্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য গভীর ঘুম অত্যন্ত জরুরি।
■পেশাগত কোনো সমস্যা থাকলে সে সমস্যাকে না জিইয়ে রেখে তা মেটানোর চেষ্টা করুন।
স্থূলতা ওজনাধিক্য শব্দটির সাথে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত। কারণ এটি এখন বহুল আলোচিত একটি বিষয়। নাগরিক জীবনে কারও কারও ক্ষেত্রে স্থূলতা বোঝা হয়ে দাড়িয়েছে। ওজনাধিক্যের জন্য বিভিন্ন শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই আমরা সকলেই ওজনাধিক্য নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। কিন্তু দেখা যায় বিভিন্ন কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। আসলে ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ব্যক্তির নিজস্ব ইচ্ছা এবং চেষ্টা। আসুন আমরা ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখার সহজ কয়েকটি টিপস জেনে নেই।
০০ প্রতিবেলা খাবার আগে অবশ্যই এক গস্নাস পানি পান করুন।
০০ খাবার সময় মজার বা প্রিয় খাবার দেখে ওদরপূর্তি করে না খেয়ে আধপেট খান/পেট খালি রেখে খান।
০০ খাবারের সময় অবশ্যই চর্বিজাতীয় খাবার বাদ দিয়ে খান। বিশেষ করে মাছ ও মাংসের চর্বি, ঘি, মাখন, পনির ইত্যাদি।
০০ ক্ষুধা না পেলে কখনই খাবনে না।
০০ বাজি ধরে বা বন্ধুদের সাথে সেলিব্রেট করার সময় খাবার না খেয়ে বরং কোথাও ঘুরে আসুন।
০০ ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। কারণ এগুলো উচ্চক্যালরী ও উচ্চ ফ্যাটবহুল খাবার। এসব খাবারের সাথে আপনি নিজের অজান্তেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ক্যালরী গ্রহণ করে ফেলেছেন।
০০ যতটা সম্ভব হাঁটাহাঁটি করুন। যেমন, কাছাকাছি দূরত্বে কোথাও হেঁটে যান, উপরে উঠতে লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়িতে চলুন।
০০ স্ন্যাকস হিসেবে ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন।
০০ কারো আশায় না থেকে নিজের ছোট ছোট কাজগুলো নিজেই করুন। যেমন-এক গস্নাস পানির জন্য কাউকে না বলে নিজেই উঠে গিয়ে নিয়ে নিন।
০০ অনেকেই বলেন, সময়ের অভাবে এক্সারসাইজ করতে পারেন না, তাই যখনই সময় পান ফ্রিহ্যান্ড কিছু এক্সারসাইজ করুন। যেমন-সকালে ঘুম থেকে উঠে বিছানাতে বসেই কিছু ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন।
০০ সপ্তাহে অন্তত একদিন নিজের ওজন মাপুন। কারণ, ওজন যদি স্বাভাবিক থাকে সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
আসুন আমরা স্থূলতাকে ভয় না পেয়ে সহজ ভাবে একে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। কারণ, স্থূলতা বা ওজনাধিক্য থেকে পরবর্তীতে বিভিন্ন বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হূদরোগ, হাইপার-টেনশন ইত্যাদি রোগ দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তির ইচ্ছার সাথে সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশও একান্ত কাম্য।
অ্যাসিডিটি কমানোর পদ্ধতি
■ প্রতিদিন সালাদের মধ্যে মুলা খান। মুলার ওপর বিট নুন বা গোলমরিচ গুঁড়ো ছড়িয়ে খান।
■ জায়ফলের সঙ্গে সৌঠচূর্ণ মিশিয়ে খান। এতে অ্যাসিডিটি দূর হয়ে যাবে।
■ আদা অথবা পটোল গরম পানির মধ্যে ফুটিয়ে সেই পানি পান করুন।
■ পিপলের চূর্ণ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান। অ্যাসিডিটি একেবারেই দূর হয়ে যাবে।
■ যখনই দুধ পান করবেন সব সময় ঠাণ্ডা দুধ পান করুন।
■ মৌরী, আমলকী এবং গোলাপফুল সমপরিমাণে মিশিয়ে চূর্ণ তৈরি করুন। সকাল-বিকাল অর্ধেক চামচ খান। এতে অ্যাসিডিটি কমে যাবে।
কাটিয়ে উঠুন বিষাদ
জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে আমরা যে কেউ ডিপ্রেশনে বা হতাশায় ভুগতে পারি। ডিপ্রেশন বা হতাশা কোন স্থায়ী রোগ নয়। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞের মতে ডিপ্রেশনকে রোগ বলে গন্য করা হয়। কোনো কারণে দুঃখকষ্ট যখন আমাদের মনে গভীরভাবে বসে যায়, তার ফলে আমরা যখন আমাদের স্বাভাবিক কাজগুলো করতে পারি না তখনই ডিপ্রেশনের উদ্ভব হয়। দিনে দিনে এই ডিপ্রেশন ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন বা ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার-এ রূপ নেয়। এর পরিণতি খুব ভাল নয়, তা আমাদের জানা। তাই ডিপ্রেশন উড়িয়ে দিয়ে কিভাবে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায় তার কিছু টিপ্স জেনে নেয়া যাক-
০ বিষাদ কাটাতে পছন্দসই কাজে ব্যস্ত থাকুন।
০ প্রতিদিন একই রুটিনের জীবন-যাপন থেকে বেরিয়ে আসুন।
০ প্রতিদিনের রুটিনে কিছু বিনোদনের সময় রাখুন। যেটা ঘরে বসে টিভি দেখা না হয়ে সিনেমা কিংবা মঞ্চে নাটক দেখা হতে পারে।
০ যার সহচার্য ভাল লাগে তার সঙ্গে সপ্তাহে একবার আড্ডা দিন। পারলে প্রতিদিন ফোনে কথা বলুন।
০ মাঝেমধ্যে গেটটুগেদার করুন।
০ কর্মজীবী বলে বাড়ির কাজ করা হয়না অবসরে। একঘেয়ে ভাব দূর করতে ছুটির দিনে ঘরকন্যার কাজ করতে পারেন।
০ যান্ত্রিকজীবন থেকে বেরিয়ে আসতে নিজে বারন্দায় গাছ লাগাতে পারেন। কোন কারণে মন বিষন্ন হলে প্রবাসী বন্ধুর সাথে চ্যাটিং করে অন্য পরিবেশে প্রবেশ করুন। বেড়াতে যান দূরে কোথাও।
০ কাজের ব্যস্ততাকে দূরে ফেলে দু-তিন দিন সময় করে প্রকৃতির কাছাকাছি চলে যান।
০ আপনজনের সাথে নিজের আনন্দের স্মৃতিগুলো নিয়ে আলোচনা করুন। চলে যান শৈশবে।
০পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেশের বাড়িতে যেতে পারেন। নিজের শেকড় চিনতে দিন নতুন প্রজন্মকে।
০ সমর্থ হলে প্রতিবেশি কোন দেশে ট্যুর করতে পারেন।
লক্ষ্যণীয়
০ এক জায়গায় আটকে থকবেন না।
০ ইতিবাচক চিন্তা করুন।
০ আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি করুন।
০ যেকোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিঃস্বার্থ হোন
০ যেকোনো সমস্যা নিয়ে আলোচনা করুন। আলোচনার সময় নিরপেক্ষ হন।
০ শেয়ার করুন। মন খুলে কথা বলুন।
০ ভাল বই, ভাল গান এবং ভাল সিনেমা দেখুন।
০ সবাইকে বন্ধু ভাবুন।
০ শপিং করুন। নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকুন। বিউটিপার্লারে যেতে পারেন।
০ খাবারের মেন্যুতে ভিন্নতা আনতে পারেন।
ঘরে ওষুধ রাখার কিছু নিয়ম
ঘরে প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ রাখার অভ্যাস অনেকেরই আছে। যদি ঠাণ্ডা লাগে বা সামান্য জ্বর আসে, তাহলে হাসপাতালে যাওয়ার দরকার নেই। কিন্তু অনেকেই ওষুধ ঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না। ফলে তাদের ভালো চিকিত্সা হয় না, এমনকি নিজের জীবনে দীর্ঘমেয়াদি অনেক ক্ষতি ডেকে আনে তারা। তাহলে পরিবারের কী ধরনের ওষুধ এবং কীভাবে ওষুধপত্র রাখা উচিত? ওষুধ ব্যবহারের নিয়মইবা আমরা কীভাবে জানতে পারি?
সাধারণত মানুষের কাছে জ্বরের ওষুধই বেশি থাকে। অন্য ওষুধ বৈচিত্র্য বেশি বলে খুবই কম থাকে। তবে ঘরে কী ধরনের ওষুধ রাখা উচিত এবং তা কীভাবে রাখা উচিত এসব বিষয়ে কিছু জানা দরকার।
— প্রথমত, ঘরে ওষুধের পরিমাণ কম এবং ভালো ওষুধ রাখা উচিত এবং এক সপ্তাহের বেশি কোনো ওষুধ রাখা উচিত নয়।
— দ্বিতীয়ত, নির্দিষ্ট সময়, স্থান এবং মানুষের জন্য নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ রাখলেই চলে। যেমন—গ্রীষ্মকালে মশার ওষুধ, শীতকালে জ্বরের ওষুধ ইত্যাদি। সাধারণত শহরাঞ্চলে অনেক ওষুধের দোকান আছে, এজন্য বড় একটি ওষুধের বাক্স ভরে তাতে বেশি করে ওষুধ রাখার কোনো দরকার নেই।
— যেখানে রাখা হয় সে ওষুধের বাক্সটি সব সময় পরিষ্কার রাখা উচিত। সাধারণত তিন বা ছয় মাসের মধ্যে একবার পরিষ্কার করলে ভালো হয়, তবে আরও কম সময় পরপর করা যায়।
— ওষুধ রাখার জায়গাটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে কাগজের বাক্সের ভেতরে ওষুধ রাখা ভালো নয়। কাগজের বাক্সে ওষুধ রাখলে ভেজা ভেজা থাকবে আবার দেরাজে রাখলে সহজেই ময়লা হবে। এসব ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। রাখার জন্য ভালো পাত্র হচ্ছে নমনীয় জিনিসের তৈরি ওষুধের বাক্স।
— রোদ লাগে এমন জায়গায় ওষুধ রাখা উচিত নয়। বিশেষ করে কিছু কিছু ওষুধ রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজে রাখতে হয়। ওষুধ কখনোই শিশুদের নাগালের ভেতরে রাখা ঠিক নয়।
— তৃতীয়ত, কিছু কিছু লোক ওষুধ রাখার সময় বাক্সের জায়গা বাড়ানোর জন্য প্যাকেটের বা ভেতরের ব্যবহারবিধি ফেলে দেয়। এটা ঠিক নয়, এতে ওষুধ ব্যবহারের নিয়মটাই ফেলে দেয়া হয়। ব্যবহারবিধি রোগীদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং একই সঙ্গে আইনগত দায়িত্বও। তাই রোগীদের ব্যবহারবিধি মেনেই ওষুধ খাওয়া উচিত। ব্যবহারবিধি মেনে চলা একটি ভালো অভ্যাস।
ব্লাড প্রেসার কমানোর সহজ তরিকা
প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। এরজন্য যা করবেন-তা হলো— অল্প একটু লেবুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খান, এতে ব্লাডপ্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ কমে যাবে।